রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা এআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আফরিনকে (১৫) আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে তার কথিত প্রেমিক সাদমান গালিব। এমন অভিযোগ তামান্নার বাবা রফিকুল ইসলাম টিপুর।
তার অভিযোগ, প্রায় ৬ আগে মাস চাইনিজ খাবারের সঙ্গে চেতনাশক মিশিয়ে তামান্নাকে খাওয়ায় সাদমান। তারপর বাসায় নিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে সটকে পড়ে। বিষয়টি বুঝতে পরে গত ২ এপ্রিল দুপুরে তামান্না আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল রাতে তিনি সাদমানকে একমাত্র আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। তবে গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু হয়নি। সাদমান নগরীর জুমির খান সড়কের বাসিন্দা। এলাকাবাসী তাকে বখাটে হিসেবেই চেনেন।
টিপু আরও জানান, তামান্নার আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করে সাদমান। এমনকি ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে তামান্নার সঙ্গে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় বলেও সন্দেহ টিপুর। এক পর্যায়ে আপত্তিকর ছবি নিজ হেফাজতে রেখে গালিব তামান্নার কাছ থেকে সটকে পড়ে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তামান্না। গত ২ এপ্রিল দুপুরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে তামান্না। মৃত্যুর পর তামান্নার পড়ার টেবিলে অঙ্ক খাতার শেষ পৃষ্ঠায় তামান্নার হাতের লেখা একটি চিরকুট (সুইসাইড নোট) পায় পরিবার।
চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমি আজ সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্য শুধু একজনই দায়ী। তার নাম হলো সাদমান গালিব। আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু ও (গালিব) আমার সাথে আর সম্পর্ক রাখতে চায় না। তাই আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না ভেবে সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমি সাদমানকে অনেক ভালোবাসি, ও বুঝল না। আশা করি আমার মরার পর ও (গালিব) আমার ভালোবাসাটা অনুভব করবে। আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না। বিদায় সাদমান।’
তামান্নার মরদেহ উদ্ধারকারী কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অলিভ জানান, তামান্নার ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। মুঠোফোনে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
থানার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, পুলিশ এ বিষয়ে কোনো তাচ্ছিল্য করছে না। কোনো শৈথিল্যও দেখাচ্ছে না। মেয়েটির মোবাইল ফোনে পাওয়া বিভিন্ন ছবি এবং তার লেখা চিরকুট যাচাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবার দেওয়া অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, তামান্না আফরিনের বাবা ও মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয় ২০১৮ সালে। এরপর থেকে তামান্না ও তার ছোট বোন তাহিয়া থাকত নগরীর কাজীপাড়া এলাকার নানা হাফেজ মো. আলমগীরের বাসায়। কাজের সুবাদে বাবা থাকতেন অন্যত্র। মা জাকিয়া বেগম চাকরি করায় মেয়েদের তেমন দেখভাল করতে পারতেন না। এ সুযোগে তামান্নার সঙ্গে ফেসবুকে পার্শ্ববর্তী জুমির খান সড়কের সাদমান গালিবের পরিচয় এবং এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক হয়।সুত্র,আমাদের সময়
Leave a Reply